ওয়াসার ভিআইপি সাবেক মিটার রিডার বর্তমানে রাজস্ব পরিদর্শক হারুন অর রশিদ রানা আন্ডার বিলিং, মিটার টেম্পারিং ও অবৈধ পানির লাইন সংযোগ প্রদানে সহযোগিতার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া বিপুল পরিমান অর্থ দ্বারা গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। ঢাকার মোহাম্মদপুরে চার চারটে বহুতল বাড়ি, একাধিক প্লট ও ফ্লাট এবং প্রাইভেট কার আছে তার। এছাড়া নিজ গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানাধীন মাখল গ্রামে রাজকীয় প্রাসাদ গড়ে তুলেছেন তিনি।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোহাম্মদপুরের টিক্কাপাড়ার ৭/এ/১৫ নং, ঢাকা উদ্যানের ৩ নং রোডের ৩৯ নং (চারতলা), নুরজাহান রোডের রম/৮ নং (দ্বিতল), চান মিঁয়া হাউজিংয়ের ২ নং রোডে একটি, মোট চারটি বাড়ির মালিক তিনি। এছাড়া গাজিপুর'র শ্রীপুরে, মাওনায়, ময়মনসিংহের ভালুকা, পাইথল ও গফরগাঁওয়ে রয়েছে তার অঢেল সম্পদ।
সর্বসাকুল্যে ৩৫ হাজার টাকা বেতনের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর বিত্ত বৈভবের মালিক হওয়ায় গ্রামবাসী ও ওয়াসার কর্মকর্তা কর্মচারীরা রিতীমত অবাক ও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত ও করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাকে দায়মুক্তি দিয়েছে বলেও দাবি করনে হারুন উর রশিদ রানা।
দুদক দায়মুক্তি দেয়ায় তারা আরো বিস্মত। তাদরে প্রশ্ন ৩৫ হাজার টাকা বেতনের কর্মচারীর ঢাকায় একটা দুটো নয় তিনটি বাড়ি করলো কিভাবে কোথায় পেলেন তিনি তিনটি বাড়ি করার টাকা, তার হাতে কি আলাদিনের চেরাগের যাদু আছে? না থাকলে দুদক তদন্ত করে হারুন উর রশিদ রানার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ খুঁজে পেল না কেন এটাই সবার কাছে বড়ো ধরনের প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে দাড়িয়েছে।নিম্নবিত্ত পরবিাররে সস্তান হারুন উর রশিদ রানার হঠাৎ করে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের বিষয় টা বাকা চোখে দেখছে তার নিজের গ্রামের লোকজন। তারা বলাবলি করছেন হারুন উর রশিদ রানার এই হঠাৎ ধনকুবের বনে যাওয়ায় গ্রামবাসী ও ঢাকা ওয়াসার কর্মচারীদের পক্ষ থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন ও ঢাকা ওয়াসার শুদ্ধি অভিযান কমিটিতে একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার এক সহকর্মী বলেন, রানা দম্ভ করে বলেন-তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন সহ প্রশাসনে অভিযোগ করে কোন লাভ হবেনা। তিনি অর্থ দিয়ে প্রশাসন ম্যানেজ করে নিবেন। রাজস্ব পরিদর্শক হারুন অর রশিদ রানা বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার ২নম্বর রাজস্ব জোনে কর্মরত রয়েছেন। পূর্বে যে সকল জোনে ছিলেন সেখানেও দুর্নীতি করেছেন। ওয়াসার পিপিআই প্রকল্পের অন্যতম সুবিধাভোগী ছিলেন রানা। বিত্তশালী এই রাজস্ব পরিদর্শক নিজে কোন ডিউটি করেন না। ব্যক্তিগত নিয়োগকৃত সহকারী মো: জাকিরসহ একাধিক ডুপলি কে দিয়ে সাইট পরিচালনা করেন। অথচ বহিরাগত দিয়ে কাজ করানো সম্পূর্ণ বেআইনী। ৫ জুলাই ২০১৮ ইং তারিখে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ এক আদেশের মাধ্যমে বহিরাগত নিয়োগ নিষিদ্ধ করে। যার স্মারক নং রা/৮২০২ প্র:রা:ক:-৫/৭/২০১৮ইং। তার সহকারী ডুপলির বেতন ২৫ হাজার টাকা ও ড্রাইভারের বেতন ২৫ হাজার টাকা। অথচ তার নিজের বেতন ৩৫হাজার টাকা। রাজস্ব পরিদর্শক হারুন অর রশিদ রানা’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, প্রথমে তিনি বিব্রত হয়ে পড়েন। কিন্তু সহজেই নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আপনার যা ইচ্ছা লিখেন। যা ইচ্ছা করেন।